নরেশ ভকত, বাঁকুড়াঃ করোনার জেরে চলতে থাকা দীর্ঘ লকডাউনে মাসের পর মাস বন্ধ ছিল অফিস-কাছারি, কারখানা। এই পরিস্থিতিতে লোকসানের কারনে অনেকে জায়গায় যেমন কর্মী ছাঁটাই করা হয়েছে তেমন অনেক ছোট মাপের কারখানা যেগুলি দীর্ঘদিন ধরে লোকসানে চলছিল সেগুলির ঝাঁপ বন্ধ হয়ে গিয়েছে। শিল্পের এই বেহাল দশার প্রভাব পড়েছে শিল্পদেবতার আরাধনাতেও।
হাতে গোনা আর মাত্র ৩ দিন বাকি, অথচ বিশ্বকর্মা পুজো (Bishwakarma Puja) নিয়ে কোনো তোড়জোড় নেই । অন্যান্য বছর বিশ্বকর্মা পুজোকে নিয়ে আলাদা উন্মাদনা থাকে । প্রতিমা তৈরীও শুরু হয় অনেক আগে থেকেই। কিন্তু , এই মুহূর্তে সারা বিশ্ব করোনা ভাইরাসের কবলে পড়ে জর্জরিত। এই অতিমারীর মধ্যে সব জায়গাতেই জমায়েত বন্ধ রেখে হবে শুধু নিয়ম রক্ষার পুজো (Bishwakarma Puja)।
তার উপর আর্থিক সংকট তো আছেই , তাই পুজোর আয়োজন সব জায়গাতেই হবে নামমাত্র। তাই অন্যান্য বছরের তুলনায় বিশ্বকর্মা ঠাকুরের চাহিদা নেই বললেই চলে । চাহিদা কম হওয়ায় পেটে টান পড়েছে বাঁকুড়া জেলার মৃ্ৎশিল্পীদের পরিবারেও।
মৃ্ৎশিল্পী রবীন্দ্রনাথ কর, বিদ্যুত রুইদাস জানান, করোনা আতঙ্ক এবং লকডাউনের জন্য চার পাঁচ মাস কাজ বন্ধ ছিল । আশা ছিল পুজোর মরসুমে হয়তো সব ঠিক হয়ে যাবে । প্রতিমা বানাতে গিয়ে মাটি ও খরের দাম মেটাতে গিয়ে হিমশিম খাওয়ার অবস্থা । তাঁর উপর সমস্ত কাঁচামালের দাম যা হয়েছে তাতে মূর্তি বানিয়েও সঠিক দাম মিলছে না।
অন্যদিকে পুজো (Bishwakarma Puja) বাজেট কম হওয়ায় অনেকেই কম দাম দিয়ে মূর্তি কিনছেন, ফলে কম দামে মূর্তি বিক্রি করতে গিয়ে আর্থিকভাবে ক্ষতির মুখে পড়েছেন তারা। করোনার আবহে মূর্তির চাহিদা কমে যাওয়ায় বন্ধ হয়ে গিয়েছে রুজি রুটি , ফলে সংসার চালাবেন কিভাবে? ভাবলেই চিন্তার ভাঁজ পড়েছে শিল্পীদের কপালে । এই পরিস্থিতিতে সরকারের পক্ষ থেকেও কোনো সাহায্য মিলছে না বলে অভিযোগ করছেন মৃৎশিল্পীরা।