হাতির উপদ্রবে ব্যাপক ক্ষতির মুখে বাঁকুড়ার হাতি উপদ্রুত এলাকার চাষীরা
নরেশ ভকত,বাঁকুড়াঃ জানুয়ারির গোড়াতেই দু’দফায় দলমা পাহাড় থেকে নেমে এসে বাঁকুড়ায় ঢুকছে ৬৮ টি জংলি হাতি । তাদের সঙ্গে রয়েছে বেশ কয়েকটি শাবক। প্রথমে বিষ্ণুপুর, বাঁকাদহ, সোনামুখি, বাসুদেবপুর এলাকায় কৃষকদের ফসলের মাঠ তছনছ করে তাদের পথে বসিয়ে দিয়ে এসেছে দাঁতাল বাহিনী। তারপর সোজা বাঁকুড়া উত্তর বন বিভাগের বেলিয়াতোড়, গঙ্গাজলঘাটি ও বড়জোড়া রেঞ্জের জঙ্গলে ঢুকে স্থায়ী ভাবে আস্তানা গেড়েছে হাতির পাল। সেই সঙ্গে এখানের ১০ /১২ টি আবাসিক হাতি যোগ হয়ে প্রায় ৮০ খানা ঐরাবত দাপিয়ে বেড়াচ্ছে উত্তর বাঁকুড়ার জঙ্গলে। সন্ধ্যা নামলেই হাতি জঙ্গল থেকে লোকালয়ে ঢুকে পড়েছে । গৃহস্থের বাড়ি ঘর ভাঙার পাশাপাশি কৃষকের মাঠের ফসলের ব্যাপক ক্ষতি করছে। ফলে আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়তে হচ্ছে চাষীদের।






বুধবার সেরকমই ছবি উঠে এলো আমাদের ক্যামেরায় ।যেখানে দেখা যাচ্ছে ভৈরবপুর বৃন্দাবনপুর পঞ্চায়েতের নিত্যানন্দপুর গ্রামে বিঘার পর বিঘা আলু, সরষে, জমিতে হাতির উপদ্রবে নষ্ট হয়েছে। সব থেকে ক্ষতির সম্মুখীন বোরো চাষিরা। বোরো ধান লাগানোর জন্য যে বীজতলা তৈরি করা হয়েছে সেই সব বীজতলা পায়ে মাড়িয়ে দিচ্ছে । এছাড়াও রোপণ করা ধানেরও ক্ষতি হয়েছে ।
সন্ধ্যা হলেই সাধারণ মানুষদের গৃহবন্দী হতে হচ্ছে হাতির আতঙ্কে। বাড়ির বাইরে কেউ বের হতে পারছেন না। ফলে সমস্যায় পড়তে হচ্ছে জঙ্গল লাগোয়া গ্রামবাসীদের । আর এখানেই প্রশ্ন উঠছে বনদপ্তরের ভূমিকা নিয়ে । এরজন্য গ্রামবাসীরা বনদপ্তরের গাফিলতিকে দায়ী করছেন । তাদের দাবি বনদপ্তর যদি সঠিক ভূমিকা পালন করত তাহলে কৃষকদের এই বিপুল ক্ষতির মুখে পড়তে হতো না ।
উদয় ঘোষ নামে এক স্থানীয় ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক বলেন , রাত হলেই আমাদের আতঙ্কে থাকতে হয় কখন হাতি গ্রামে ঢুকে পড়ে । ঘরবাড়ি ভাঙার পাশাপাশি ফসলের ব্যাপক ক্ষতি করছে দলটি । বনদপ্তরের গাফিলতির কারণেই ক্ষতি হচ্ছে বলে তিনি জানান । শ্রীধর মন্ডল নামে অপর এক ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক আবার ফসলের ক্ষতি পূরণ সঠিকভাবে পাচ্ছে না বলেও জানান । তিনি বলেন ফর্ম ফিলাপ করছি কিন্তু টাকা ঢুকছে না। অনেক সময় ফর্ম জমা করতে গেলে তারা বলছেন ডেট পেরিয়ে গেছে । সব মিলিয়ে তাদের এই দুর্দশার জন্য বনদপ্তরের গাফিলতিকেই তিনি দায়ী করেন। বড়জোড়া বন আধিকারিক ঋত্বিক দে জানালেন ৪-৫ লাখ টাকার মত বাকি রয়েছে চাষীদের দিতে, যত শীঘ্রই পারব আমরা দিয়ে দেবার চেষ্টা করছি ৷