ডিজিটাল ডেস্ক, জেলার খবর, উত্তর ২৪ পরগনা : লড়াইটা ছিল অনেকদিনের। তারই বহিঃপ্রকাশ ফের হল বৃহস্পতিবার। তৃণমূলের গোষ্ঠীদন্ডের (factionalism) ফের এক জ্বলন্ত উদাহরণ দেখলো গোটা পশ্চিমবঙ্গ। দুই গোষ্ঠীর মধ্যে চলে আসা দীর্ঘদিনের ঠান্ডা লড়াইয়ে যেন আচমকাই ঘি ঢালা হল। যার ফল স্বরূপ বৃহস্পতিবার রাতভর দফায় দফায় উত্তপ্ত হয়ে উঠল উত্তর ২৪ পরগনার দেগঙ্গা। পরিস্থিতি এতটাই উত্তপ্ত হল যে খোদ তৃণমূলেরই সমর্থকরা একে অপরের সাথে লড়তে গিয়ে নিজেদেরই নেত্রী, অর্থাৎ মমতা ব্যানার্জীর ছবি সহ পোস্টার একেবারে ছিঁড়ে মাটিতে ফেলে দিলেন। ভেঙে গুড়িয়ে দিলেন নিজেদের পার্টিরই ‘পার্টি অফিস’।
স্থানীয়দের মতে, বিধায়ক রহিমা মণ্ডল বনাম পঞ্চায়েত সভাপতি মফিদুল হক এর মধ্যে গোষ্ঠীদন্ড (factionalism) অনেকদিনের। দীর্ঘদিন ধরে তৃণমূলের এই দুই গোষ্ঠীর (factionalism) মধ্যে চলে আসছে ঠান্ডা লড়াই। যার ফল ভোগ করেন এলাকাবাসীরা। স্থানীয়দের অভিযোগ, এই দুই গোষ্ঠীর (factionalism) মধ্যে সংঘর্ষের ফলে রাতভর চলে দেদার বোমাবাজি। এমনকি এই দুই দলের সমর্থকেরা রীতিমতন এলাকায় দাপিয়ে বেড়ায় রাতভর।
সূত্রের খবর, সম্প্রতি রাজ্যে আছড়ে পড়া সুপার সাইক্লোন আম্ফানের ফলে ঘটে যাওয়া বিপর্যয়ের ক্ষতিপূরণের দাবিতে বিধায়ক রহিমা মন্ডলের কার্যালয়ে ভিড় জমিয়েছিলেন স্থানীয়রা। সেখান থেকেই অশান্তির সূত্রপাত বলে মনে করা হচ্ছে। দিনভর চাপা অশান্তির পর রাতে আচমকাই পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। অভিযোগ, জনা কয়েক দুষ্কৃতী এলাকায় বোমাবাজি করতে থাকে। চলে গুলিও। এরপর একটি দলীয় কার্যালয়ে ঢুকে তারা তাণ্ডব চালায়। অভিযোগ, ছিঁড়ে ফেলা হয় দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পোস্টারও। রাতে এত অশান্তির জেরে আতঙ্কিত হয়ে পড়েন স্থানীয় বাসিন্দারা। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছয় দেগঙ্গা থানার বিশাল পুলিশ বাহিনী। তারা ধীরে ধীরে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। তবে দুষ্কৃতীরা এখনো অধরা।
উল্লেখ্য, আশ্চর্যজনক ভাবে এলাকায় ঘটে যাওয়া এতবড় ঘটনা প্রসঙ্গে এলাকার বিধায়ক রহিমা মন্ডল কোনপ্রকার মন্তব্য করতে চাননি।এই ঘটনা কে বা কারা ঘটাল, তা নিয়ে মুখে কুলুপ এঁটেছেন বিধায়ক রহিমা মণ্ডল। মফিদুল গোষ্ঠীর অভিযোগ, আমফান ক্ষতিপূরণ নিয়ে দুর্নীতিতে জড়িয়ে পড়েছেন বিধায়ক। তাই জনরোষের প্রতিফলন ঘটেছে বৃহস্পতিবার রাতের ঘটনায়। দেগঙ্গায় এ নিয়ে সাম্প্রতিককালের মধ্যে একাধিকবার গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে জড়িয়েছে রাজ্যের শাসকদল। বেশিরভাগ সময়েই রাতেই সংঘর্ষে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে এলাকা। কখনও প্রাক্তন পঞ্চায়েত নেতার বাড়ি লক্ষ্য করে বোমাবাজি, তো কখনও হামলা। গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব নিয়ে তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজে এতবার দলকে সতর্ক করা সত্ত্বেও উত্তর ২৪ পরগনার এই এলাকায় যে তা এতটুকুও কমেনি, সাম্প্রতিক কয়েকটি ঘটনাই তার প্রমাণ।রাজ্যে ঘটে যাওয়া প্রায়শই তৃণমূলের গোষ্ঠীদন্ডের ঘটনা কি এটাই প্রমান করছে যে খোদ সুপ্রিমোর কথাই মানতে নারাজ তার দলের লোকজন ?