নরেশ ভকত,বাঁকুড়া: লক্ষ লক্ষ টাকা আত্মসাৎ করে চম্পট (Escape) পোস্ট মাস্টার, মাথায় হাত গ্রাহকদের । কেউ সারা জীবনের সঞ্চিত অর্থ রেখেছেন মাস গেলে এমআইএসের টাকায় সংসার চালাবেন বলে । কেউ রেখেছেন মেয়ের বিয়েতে খরচ করবেন বলে কেউ বা ফুটো চালার ঘর মেরামত করবেন বলে জমাচ্ছিলেন একটু একটু করে । কিন্তু সব স্বপ্ন এক নিমেষে শেষ করে দিল খোদ পোস্ট মাস্টার । কেউ খুইয়েছেন ১২ লাখ কেউ ১৬ লাখ ! পোস্ট অফিসের সামনে এদিন দেখা গেল শুধুই হাহাকার ।
বাঁকুড়ায় মেজিয়া জপমালী উপ ডাকঘরের ঘটনা। পোস্ট অফিসের অ্যাকাউন্ট বই থেকে উধাও গচ্ছিত আমানত।দু একজন নয় অধিকাংশ গ্রাহকের সাথেই ঘটেছে একই ঘটনা।এদিন এক গ্রাহক তার মেয়ের বিয়ের জন্য টাকা তুলতে গেলে এই ঘটনা সামনে আসে।উপ ডাকঘর থেকে যে পাশবই ও একাউন্ট নম্বর দেওয়া হয়েছিল তার পুরোটাই ভুয়ো । দীর্ঘ কয়েক বছর ধরে এই কার্যকলাপ চালিয়ে আসলেও পোস্ট মাস্টার পিনাকী রায়কে সন্দেহ করেনি কেউ।
প্রসঙ্গত, এক বছর যাবৎ অভিযুক্ত পিনাকী রায় এই পোস্ট অফিসে বিশেষ আসতেন না । গ্রামের এক স্থানীয় যুবককে পোষ্ট অফিস খোলা ও টাকা পয়সা লেনদেনের দায়িত্ব দেন তিনি। সেই যুবক দিনের পর দিন ডাকঘরে গ্রাহকদের জমা টাকা পৌঁছে দিতেন পিনাকী রায়ের কাছে । এই ভাবেই চলে আসছিল এতদিন । সবশেষে গল্পের যেমন শেষ পাতা থাকে ঠিক সেই ভাবেই শেষ হলো এই ঘটনারও। তবে এলাকায় শোরগোল পড়ার আগেই চম্পট (Escape) দেয় পোস্ট মাস্টার ।
জপমালী উপ-ডাকঘরে অন্য এক কর্মী পোস্ট অফিস খুলতে গেলে বিক্ষোভ প্রদর্শন করে গ্রামবাসীরা । মেজিয়া থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে আসে এবং পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। বিক্ষোভ রত গ্রাহকেরা অভিযুক্ত পিনাকী রায়ের বিরুদ্ধে ভারতীয় ডাক বিভাগ ও মেজিয়া থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করে । ডাক বিভাগ থেকে আশ্বাস দেওয়া হয় গ্রাহকেরা গচ্ছিত টাকা ফেরত পাবে ।
একদিকে বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে টাকা রেখে মাথা ঠুকছেন গ্রাহকেরা অন্যদিকে উপ ডাকঘরেও চলছে একই দুর্নীতি । সাধারণ মানুষ যাবে কোথায় ?